অবহেলিত ছেলেটি যখন পুলিশ
পর্ব ২
লেখকঃ সাদমান আদ্-দ্বীন প্রতীক
অবহেলিত ছেলেটি যখন পুলিশ পর্ব 2 | obohelito cheleti jokhon pulice part 2 |
বাংলোর সামনে গিয়ে যাকে দেখলাম তাকে দেখে আমার মাথা গরম হয়ে গেলো।
কারণ বাংলোতে আমার বাবা আর মা ছিলো।
কিন্তু তারা একসাথে কেনো?
আমিঃ আপনাদের এই বাড়ি বিক্রি করতে বলেছে না ডন মাফিন
বাবাঃ হ্যা, তবে আমি বেচে থাকতে পারবে না।
আমিঃ কেনো?
বাবাঃ তোমাকে একটা গল্প বলি,
আজ থেকে কয়েক বছর আগে, আমি একজন পুলিশ অফিসার ছিলাম।
আমার পরিবার বলতে বউ আর বাচ্চা ছিলো।
একদিন এক মন্ত্রীর ছোট ভাই কে ধরে নিয়ে আসি, কিন্তু মন্ত্রী সেটা ভালোভাবে নেয়নি। সে তার পাওয়ার দেখায় আমাকে।
আমি তারপরও নিজের ডিউটি করতে থাকি, তবে হঠাৎ একদিন ওরা আমার বউকে রেপ করতে যায়, আমার বউ কোনো ভাবে পালিয়ে আসলেও মন্ত্রী আমাকে কল দিয়ে বলে যদি ওর কথা না শুনি তবে আমার বউ বাচ্চাকে মেরে ফেলবে।
আমার কাছে তাদের বাচানোর উপায় বলতে একটাই উপায় ছিলো।
সেটা হলো বউকে ডিভোর্স দিয়ে দিবো। বউকে ডিভোর্স দেওয়ার পর আমরা আলাদা প্লান করি,
আমার বন্ধুর বউকে নিজের বউ আর বন্ধুকে আমার বউ এর হাসবেন্ড বানানোর নাটক করি যাতে মন্ত্রী আমার পরিবার কে ছেড়ে দেয়।
তবে প্লানে একটা ছোট্ট ভুল ছিলো, আমার ছেলেটাকে আমরা এক স্থানে কিছুদিন রেখে দিয়ে কাছে আনতাম, তবে তার আগেই সে চলে গেছিলো।
আসলে অভিমানী ছিলো অনেক। আর এই বাংলো তার জন্য, সারা জীবনে তো কিছুই দিতে পারলাম না তাকে, এইবার যদি দিতে পারি।
মাঃ বাবা তুমি আমার ছেলের মতো। প্লিজ আমাদের এই বাড়িটা ছেড়ে দাও।
এসব শুনে আমার চোখে পানি চলে আসলো, যে মা বাবা আমাকে বাচাতে এতকিছু করলো তাদেরই ভুল বুঝলাম।
আমি তাদের পায়ে পরে,
প্লিজ মাফ করে দাও আমাকে, তোমরা আমার জন্য এতকিছু করলে আর আমি তোমাদের ঘৃণা করে গেলাম।
প্লিজ মাফ করে দাও।
মাঃ তুই আমার প্রতীক?
আমিঃ হ্যা মা আমিই তোমাদের সেই হতভাগা সন্তান।
বাবাঃ না বাবা, তুই আমাদের মাফ করে দে।
সব দোষ ঐ মন্ত্রীর।
আমিঃ আমি ওকে ছাড়বো না।
মাঃ না বাবা তুই কিছু করবি না, এমনিও এক সন্তানকে হারিয়েছি, আর না
আমিঃ মানে?
মাঃ ঐ সব নাটকের সময় আমি প্রেগন্যান্ট ছিলাম, তোর আরও একটা ভাই হয়, একদম তোর মতো ছিলো।
৫ মাস আগে, তোর ভাই দেখে কিছু ছেলে মিলে একটা মেয়েকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, ও ছোট মানুষ হলেও কারও বিপদ দেখতে পারতো না।
তোর ভাই ঐ মেয়েটাকে বাচাতে পারলেও নিজেকে বাচাতে পারেনি।
আমিঃ এইকাজ কার ছিলো?
বাবাঃ ডন মাফিন।
আজ নিজের ভিতর অনেক খারাপ লাগা কাজ করছে, যে মা বাবা আমাকে এত ভালোবাসে তাদের ভুল বুঝেছি।
আর তার উপর আমার মতো লোকের দোষে ডন মাফিনের মতো লোকরা সাপোর্ট পাই।
না এবার আমাকে ভালো হতে হবে। অনেক ভালো হতে হবে।
যা খারাপ কাজ করেছি সব ঠিক করতে হবে।
আমি থানাায় এসে সবাইকে,
আমার এলাকার সব আনসলভ্ড কেস এর ফাইল চাই, ১ ঘন্টার মধ্যে
এস আইঃ কেনো স্যার
আমিঃ বায়েজিদ সাহেব একটু আমার রুমে আসেন, আর বাকি রা কাজে লেগে পরেন।
রুমে,
আমিঃ বায়েজিদ সাহেব জীবনে তো অনেক টাকা কামালাম, এবার নাহয় নিজের ভুল সুধরে ফেলি।
আমাদের স্টেশনে মাফিনের লোক আছে। তাই আপনাকেই সব বলি।........
সব প্লান ক্লিয়ার
এস আইঃ ইয়েস স্যার।
এক ঘন্টা পর,
স্যার এইযে সব ফাইল।
আমিঃ এর ভিতর থেকে মাফিনের সব কেস আলাদা করো
কনস্টেবলঃ ইয়েস স্যার।
আমিঃ ফাইল গুলো রেডি হলে আমাকে দাও।
এমন সময় মাফিনের কল,
মাফিনঃ বন্ধু তুমি কই?
আমিঃ বন্ধু আমি তো উগান্ডায় আছি।
মাফিনঃ কেনো?
আমিঃ আরে উগান্ডায় আমাদের হিরো আলোমের গান জাতীয় সঙ্গীত হচ্ছে। তাই আলম স্যারের প্রোটেকশন দেওয়া আমার দায়িত্ব
তোমারে খুব মিস করছি, পরে কথা বলবো বাই।
আমিঃ সব ফাইল রেডি, এইবার চলো।
এক এক করে মাফিনের ছোট খাটো সব দালালদের শেষ করা শুরু করলাম।