অবহেলিত ছেলেটি যখন পুলিশ
পর্ব ১
অবহেলিত ছেলেটি যখন পুলিশ পর্ব ১ | obohelito cheleti jokhon pulice part 1 |
যেদিন আমার মা বাবার ডিভোর্স হয়ে গেলো দুজনই আমাকে রেখে নিজেদের নতুন জীবন সঙ্গী নিয়ে চলে গেলো।
আমার কথা কারও মনে হয়নি।
তখন বুঝিনি তাদের ডিভোর্সের কারণ। পরে জানতে পারলাম টাকা।
সেদিনই বুঝতে পারলাম টাকা ছাড়া দুনিয়াতে কোনো কিছুর দাম নেই।
জীবনে অনেক সংগ্রাম করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি।
প্রতিটি পদে পদে আমাকে অপমান মারধর করা হয়েছে।
একবার কলেজের এক ওসির মেয়ের সাথে কথা কাটাকাটি হওয়ায় আমাকে জেলে দেয়। অনেক মারে।
সেদিন বলেছিল আসল পাওয়ার হলো পুলিশ।
ঠিক করি পুলিশ হবো।
আমি, সাদমান আদ্-দ্বীন প্রতীক। এস পি।
এগুলো সব আমার ছোট বেলার ঘটনা। সেদিন থেকে অনেক কষ্ট করে এই পর্যায়ে এসেছি।
এসব ভাবছি হঠাৎ করে আমার ফোন বেজে উঠলো।
ওপাশ থেকে,
স্যার এলাকার বড় গুন্ডা শাকিলের ভাইকে মার্ডার করেছে রোহান। প্রমান আছে সব।
আমিঃ সব নিয়ে আমার সাথে দেখা করো, আর রেকর্ডে প্রমানের কথা উল্লেখ কোরো না।
কিছুক্ষণ পর,
হাবিলদারঃ এইযে স্যার সব প্রমাণ। এইবার
আমিঃ চলো।
সোজা রোহান এর কাছে,
আমিঃ শাকিলের ভাইকে খুন করায় আপনাকে গ্রেফতার করা হলো
রোহানঃ স্যার আমি কিছু করিনি
আমিঃ সব প্রমাণ আছে
রোহানঃ প্লিজ স্যার, ঐটা খুন না, এক্সিডেন্ট। তাও রোহানের বন্ধু করেছে।
আমিঃ প্রমাণ কি?
রোহানঃ এইযে সব প্রমাণ।
আমি সব নিয়ে বললাম,
দেখ ভাই, এইটা পুলিশ কেস, এত সহজে তো বাচতে পারবি না
রোহানঃ স্যার আমি ১০ লাখ দিচ্ছি
আমিঃ কনস্টেবল। কলেক্ট করে নিও
বলেই চলে এলাম।
কনস্টেবলঃ স্যার এইবার?
আমিঃ চলো শাকিলের বাসায়।
শালিকের বাসায়,
শাকিলঃ স্যার আমার ভাইকে যে মেরেছে তাকে ছাড়বো না, আপনি প্লিজ বলেন কে মেরেছে
আমিঃ সব প্রমাণ তো আছে, তবে এই কেস সল্ভ করলে সরকার গোল্ড মেডেল দিবে
শাকিলঃ আপনার যত সোনা চায় নিয়ে যান তবে আমাকে প্রমাণ গুলো দেন।
আমিঃ আপনার ভাই মারা গেছে, এই মুহুর্তে মনে হয়না বাসায় ৫০ লাখ আছে
শাকিলঃ ৫০ লাখ কেনো? ঐ কে আছিস ১ কোটি নিয়ে আয়।
আমিঃ এই নিন প্রমাণ, ওকে কে মেরেছে। বলেই টাকা নিয়ে চলে আসলাম।
কনস্টেবলঃ স্যার আপনার জবাব হয় না, এইভাবে আর একমাস চলতে থাকলেই আমরা বড়লোক হয়ে যাবো
আমিঃ সে গুড়ে বালি। আমার পোস্টিং হয়ে গেছে৷ কাল চলে যাবো
কনস্টেবলঃ কোথায় স্যার?
আমিঃ চট্টগ্রাম
এদিকে,
ডন মাফিনঃ ঐ মিনিস্টার, আমাদের এই এলাকার সব পুলিশ এত ভালো কেনো?
মন্ত্রীঃ কি করবো বল, সব ভালো হয়ে যাচ্ছে, আর খারাপরা ভালোদের নিচে পরে আছে
মাফিনঃ এই এলাকায় এমন কাউকে নিয়ে আয় যে কি না আমার থেকে বড় হারামি।
মন্ত্রীঃ তোর থেকে বড় হারামি তো একটাই আছে, তবে ওরে বোঝার ক্ষমতা কারও নাই
মাফিনঃ অত কিছু বুঝি না নিয়ে আয় ওকে।
অন্যদিকে,
এস আইঃ আজকে স্বাধীনতা দিবস, আমাদের শহর যেন কখনো সমস্যাতে না পরে।
কনস্টেবলঃ স্যার দোয়া করেন যেন আমাদের শহর এবারকার মতো বেচে যায়।
এস আইঃ কেনো?
কনস্টেবলঃ আমাদের নতুন এস পির নাম প্রতীক, আর ও আসলেই একটা দুর্নীতির প্রতীক।
নিজের দেশকেও টাকার জন্য বেচে দিতে পারে।
এরই মধ্যেঃ
আমিঃ আরে পুলিশ অফিসারস, কি অবস্থা সবার?
সবাইঃ ভালো স্যার
আমিঃ সবার পরিচয়?
সবাই এক এক করে সেল্যুট করে পরিচয় দিচ্ছে, শুধু একজন সেল্যুট দিলো না
নাম, বায়েজিদ। এস আই।
আমিঃ এস আই সেল্যুট কই?
এস আইঃ আমি সেল্যুট করতে পারবো না স্যার, একজন দুর্নীতিবাজকে আমি সেল্যুট করতে পারবো না।
আমিঃ ইচ্ছা করলে জোর করে সেল্যুট করাতে পারতাম, তবে আমি চ্যলেন্জ করলাম তুই নিজে সেল্যুট করবি
আগে বল এলাকার সবচেয়ে বড় ডন কে?
হাবিলদারঃ স্যার মাফিন নামের একজন।
আমিঃ ওর সাথে মিটিং ফিক্স করো।
মিটিং এ,
শোন ভাই, তুই যা কাজ করবি তার ২৫% আমার, বদলে সব রকম সাহায্য করবো আমি।
মাফিনঃ এমন কাউকেই দরকার ছিলো আমার
আজ থেকে তুই আমার বন্ধু।
আমিঃ ওকে দোস্ত আজ চলি।
এরপর এস আই কে নিয়েই আমি আমার GF এর সাথে দেখা করতে গেলাম।
ও চট্টগ্রাম এ থাকায় অনেকদিন দেখা হয়নি।
ডিপার্টমেন্ট এ আমি যত খারাপ ততটাই ভালো ওর কাছে।
একটু বোকা হওয়ায় ও কখনো সন্দেহ করে না। ওর নাম আনিকা।
আনিকাঃ তুমি অনেক খারাপ, আমার সাথে দেখা করতেও আসো না
আমিঃ এইজন্য একেবারে এইখানে চলে আসলাম
আনিকাঃ সত্যি তো, নাকি মিথ্যা বলছো?
আমিঃ সত্যি।
আনিকাঃ তাহলে এবার তোমার সাথেই থাকবো
আমিঃ আমার পাওনা আগে দিয়ে দাও
আনিকাঃ কিসের পাওনা? কোনো পাওনা নেই
আমিঃ তাহলে কিন্তু আর কথা বলবো না
আনিকাঃ না না যেও না, এই নাও।
বলেই............
ওর সাথে দেখা করে থানায় যাচ্ছি হঠাৎ করে মাফিনের কল,
মাফিনঃ দোস্ত *** এ একটা বাংলো আমার খুব পছন্দ হয়েছে। বাংলোটা আমার চাই।
আমিঃ তা সমস্যা কি
মাফিনঃ ঐ হারামি বিক্রি করবে না।
এর জন্য ঐ লোক কে ৫০ লাখ ও দিতে চেয়েছি।
তুই যদি এই দামে ঐটা নিয়ে দিস তবে তোকে ৫০ দিবো।
আমিঃ ওকে কাজ হয়ে যাবে।
বাংলোর সামনে গিয়ে যাকে দেখলাম তাকে দেখে আমার মাথা গরম হয়ে গেলো।
.............................................(চলবে)