রোমান্টিক বেয়াইন পর্ব ১

রোমান্টিক বেয়াইন

লেখকঃ আতিক আহসান লিমন

পর্বঃ ০১

রোমান্টিক বেয়াইন romantic beyain


লিমন আর রাগ করিস নাহ ভাই আমার চল বিয়েটা তো আচমকা হয়ে গেছে চল আমাদের সাথে (মেঝ ভাইয়া) 
আরে কি রাগ করবো আমি ভাইয়া আমার একটা ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে তাই যাবো নাহ এখন পড়ে একসময় যাবো (আমি)
দেখো লিমন চলো প্লিজ রাগ করে থেকো নাহ (মেঝ ভাবি)
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই ফোনটা বেজে উঠলো।
 এই দেখো ভাইয়া বলছিলাম নাহ কাজ আছে আজকে একটা ফাইনাল ম্যাচ আছে সেটা আমাকে খেলতেই হবে এই দেখো ফোন দিয়ে যাচ্ছে (আমি)
ভাইয়া মন খারাপ করে রইলো। আমি ফোনটা রিসিভ করতে করতে বাইরে চলে গেলাম।
এদিকে বাসার ভিতর
বলছিলান নাহ লিমন এখনো রাগ করে আছে ও ছোট তো ওর খুব ইচ্ছে ছিলো বিয়েতে আনন্দ করার (বড় ভাবি)
আমি আর কি বলবো ও কয়েকদিন ফোন ধরে নি তাতেই বুঝে গেছিলাম ও প্রচুর রাগ করেছে (মা)
এখন কি করবো মা ও তো আমার সাথে এখন পর্যন্ত কথাই বলে নাই (মেঝ ভাবি)
হুম বুঝেছি ওর রাগ ভাঙাতে কষ্ট করতে হবে (বড় ভাবি)
কিন্তু এখন হাবিবকে (মেঝ ভাইয়া) ওর শ্বশুর বাড়ি যেতেই হবে লিমন আসার পর যাওয়ার জন্য এতোদিন অপেক্ষা করালাম কিন্তু আজকেও লিমন যাবে নাহ ওদের তো যেতেই হবে নাহলে হাবিবের শ্বশুর বাড়ির মানুষের মানসম্মান থাকবে না (মা)
মা আমি যাবো নাহ লিমনকে নাহ নিয়ে ভাই আমার অনেক কষ্ট পেয়েছে (মেঝ ভাইয়া)
কিন্তু ওখানে নাহ গেলে সমস্যা হবে (মা)
আমি যাবো না মানে যাবো নাহ কোনো কথা শুনতে চাই নাহ বলেই বসে রইলো (মেঝ ভাইয়া)
এদিকে আমি বাইরে গিয়ে ফোন রিসিভ করলাম
হ্যা বলেন ভাইয়া (আমি)
শোনো লিমন তুমি এখনই চলে আসো দুপুরে আমাদের এখানে খেয়ে রেস্ট নিয়ে খেলতে নামবা (দল মালিক)
ভাইয়া থাক বাসায় একটু প্রবলেম আছে ঠিকসময় মাঠে পৌঁছে যাবো (আমি)
আচ্ছা তবে এখন আসলে খুশি হতাম (দল মালিক)
অন্য একসময় যাবো (আমি) 
আচ্ছা ঠিকাছে সঠিক সময় চলে আসবা কিন্তু (দল মালিক) 
আচ্ছা বলেই ফোন রাখলাম (আমি)
এমনিতেই মন খারাপ। আপনারা হয়তো কিছুই বুঝতে পারছেন নাহ। তাহলে শুনুন আমি ক্রিকেট মোটামুটি ভালো খেলি। তাই দূরের এক বন্ধুর শহরে বড় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়েছিলো।যার জন্য আমি ১৫ দিনের জন্য বন্ধুর শহরে খেলতে গিয়েছিলাম। ৭ দিন যেতেই শুনি ভাইয়ার জন্য মেয়ে দেখতে গিয়েছে।  আমি কিছু বলিনি কারণ সবাই জানে আমি ১৫ দিন পর আসবো তাই আমি মনে করেছি বিয়ে তারপরই হবে এসে বিয়েতে অনেক মজা করবো। কিন্তু পরেরদিন আম্মু ফোন দিলো আমি রিসিভ করলাম 
হ্যা আম্মু বলো (আমি)
বাবা তুই চলে আয় আর খেলাধূলা করতে হবে নাহ (মা)
কেনো আম্মু কি হয়েছে? (আমি)
তোর ভাইয়ের বিয়ে ২ দিন পর আর তুই আসবি নাহ (মা)
আম্মু তুমি জানো আমার ট্যুর ১৫ দিনের এখান থেকে ১৫ দিনের আগে কোচ যেতে দিবে না আর আমি নিজেই আসবো নাহ তোমরা বিয়েটা ৭ বা ৮ দিন পিছাতে পারবে নাহ (আমি)
বাবা তোর আব্বু বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে এখন কি হবে বল (মা)
আচ্ছা তাহলে তোমাদের যা ইচ্ছে করো সমস্যা কি আমি ৮ দিন পরই আসবো (আমি)
বাবা তুই রাগ করছিস কেন (মা)
আরে আমি রাগ করবো কেন সমস্যা নেই তোমরা বিয়েতে ইনজয় করো বলেই ফোন কেটে দিলাম (আমি)
এরপরে ভাইয়া অনেকবার ফোন দিছে ফোন ধরি নি। আব্বু ও দিছে বলতে গেলে সবাই কল দিছে ধরিনি। পরে এক বন্ধুর থেকে খবর পেলাম বিয়েটা হয়ে গেছে ভাইয়ার। তারপর ভাইয়া কল দিলো রিসিভ করলাম
লিমন তুই এতোদিন ফোন ধরিসনি কেন আর তুই বিয়েতে আসলিনা কেন (ভাইয়া)
এইতো ভাইয়া বিজি ছিলাম খুব ফোন সবার ফোন কোচের কাছে ছিলো (মিথ্যে বললাম আমি)
ভাই তুই রাগ করিস নাহ তুই না আসাতে আমিও বিয়েটা করতে চাইনি আব্বুর সম্মান বাঁচাতে বিয়েটা করতে হলো (ভাইয়া)
হুম বুঝতে পেরেছি আমি এখন ইনজয় করো বিয়ে (আমি)
এই লিমন তোর ভাবি তোর সাথে কথা বলতে চায় কথা বল (ভাইয়া)
ভাইয়া শোনো খাবারের জন্য ডাক দিয়ে গেছে সঠিক সময় নাহ গেলে খাবার পাওয়া যাবে নাহ পরে কথা বলবো বলেই ফোন কেটে দিলাম (আমি)
অনেক ইচ্ছে ছিলো ভাইয়ের বিয়ে নিয়ে। আমার থেকে আমার বন্ধুরা বেশি আগ্রহী ছিলো ওরা আগে থেকেই অনেক ইনজয় করার প্লান করে রেখেছিলো।
যাই হোক ট্যুর শেষ হওয়ার পর বাসায় এলাম। আসতে রাত হয়ে গেছিলো। এসে দেখি বাসায় অনেক মেহমান। আমি সবাইকে সালাম দিয়ে রুমে গিয়ে দিলাম। কাউকে ডাকতে মানা করেছিলাম শরীর ক্লান্ত ছিলো। তবুও ডাকাডাকি করেছিলো আমি দরজা আটকিয়ে দিলাম ঘুম। রাতে ওয়াশরুমে যাওয়ার সময় উঠে দরজা খোলা রেখেছিলাম কারণ
আমি দরজা খোলা রেখে ঘুমাই যাতে সকালে কেউ উঠাতে পারে আমার আবার ঘুম বেশিতো কলেজ মিস হয়ে যায়। পরেরদিন সকালবেলা কারো চুড়ির আওয়াজে ঘুম ভাঙলো আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখি একটি মেয়ে। আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি 
"" কে তুমি রূপসী আমার মনটা নিলে কেড়ে,
তোমায় দেখে বুকটা আলতো ধকধক করে।
তুমি ভেঙে দিলে ঘুম তোমার চুড়ির আওয়াজে,
তোমায় দেখে ঘুমপাখি উদাও আমায় চোখে;""
এই যে মিস্টার আপনি এতোক্ষণ ঘুমিয়ে আছেন কেন (মেয়েটি)
মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলাম। তার কথা শুনে ভাবনার ছেদ ঘটলো। আমি মেয়েদের থেকে দূরে দূরে থাকি তাই ওকে নিয়ে আর চিন্তা ভাবনা না করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
ঐ কথা বলছেন নাহ কেন (মেয়েটি)
আপনি কে আমার রুমে আসছেন কেন (আমি)
আমি শিফা আপনার মেঝ ভাবির বোন সম্পর্কে আপনার বেয়াইন (শিফা)
হুম বুঝলাম তো এখানে কি চান (আমি)
এসেছি আপনাকে জ্বালাতে বলেই হাসতে লাগলো (শিফা)
দেখুন আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই নাহ তার আগে রুম থেকে বের হন (আমি)
ভাব দেখে আর বাঁচি নাহ যাচ্ছি রুম থেকে (শিফা)
শিফা চলে গেলো আমি ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হলাম। তারপর নিচে নামলাম 
আম্মু আম্মু  (আমি)
বল বাবা কিছু বলবি (মা)
আমার ক্ষুধা লাগছে খেতে দাও তাড়াতাড়ি (আমি)
রান্না তো হয়নি এখনও হালকা নাস্তার ব্যবস্থা আছে ঐটা দিবো (মা)
না থাক লাগবে নাহ বাড়ির সবাই ব্যস্ত আমি কালকে রাত থেকে কিছুই খাইনাই তার কোন খেয়াল নেই আমি বাইরে থেকে খেয়ে নিচ্ছি বলেই বের হলাম (আমি)
আরে আরে লিমন শোন বাবা (মা)
ঐ লিমন দাড়া আমি খাবার নিয়ে আসছি (বড় ভাবি)
আমি তাদের কথা না শুনেই চলে এলাম। বাইরে গিয়ে সকালবেলা রেস্তোরাঁয় গিয়ে গরুর মাংস দিয়ে খিচুড়ি খেলাম। পকেট থেকে ফোন বের করে দেখি ভাইয়া কল দিয়েছিলো। আমি আর কল ব্যাক করলাম নাহ মাথায় রাগ ছিলো। তাই বন্ধুদের ফোন দিয়ে বন্ধুদের কাছে যেতে লাগলাম।ঐদিকে
মা লিমন ঐভাবে কোথায় গেলো (ভাইয়ারা)
ও রাগ করে বের হলো খাবার চাইছে দিতে পারিনি তাই (মা)
কেনো খাবার এখনো হয়নি (বড় ভাইয়া)
নাহ আরেকটু সময় লাগবে (বড় ভাবি)
আরে ও কালকে কতোদূর থেকে জার্নি করে এসেছে তার উপর আবার আমাদের উপর রাগ করে আছে তোমরা ওর যত্ন না করে বিয়ে সামলাচ্ছো (মেঝ ভাইয়া)
কি করবো বল এদিকটাও তো দেখতে হবে (মা)
আচ্ছা বুঝলাম তোমরা বিজি তোমাদের নতুন বৌমা কোথায় ও কি করতেছে ও অন্তত পক্ষে ওর রাগ ভাঙিয়ে খেয়াল রাখবে (মেঝ ভাইয়া)
আসলে আমিও মায়ের সাথে কাজ করছিলাম (মেঝ ভাবি নিচু কন্ঠে)
হাবিব বেশি কথা বলো কেন সামান্য ভুল হতেই পারে যাও যে যার কাজ করো লিমন আসলে আমি কথা বলবো (আব্বু)
আব্বুর কথায় সবাই চুপ। যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলো। এদিকে আমি চলে গেলাম বন্ধুদের কাছে 
কিরে কেমন আছিস (আমি)
এইতো আলহামদুলিল্লাহ তুই (সবাই)
আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছি (আমি)
হুম ভাইয়ের বিয়ের ট্রিট দিবি কবে (সিয়াম)
নিজেই বিয়েতে ছিলাম নাহ (আমি)
তো আমরা কি করবো আমাদের ট্টিট দিতে এবং বাসায়ও খাওয়াতে হবে (দূর্জয়)
আচ্ছা ওয়েট দাড়া বাসায় কল দিয়ে দেখি আজকে হয় কি না (আমি)
আচ্ছা দেখ খাবারের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই (আনান)
আমি একটু পাশে গিয়ে মেঝ ভাইয়াকে কল দিলাম। ভাইয়া কল রিসিভ করলো
হ্যা লিমন তুই বাসায় আয় খাবার খেতে তাড়াতাড়ি (মেঝ ভাইয়া) 
ভাইয়া আমি খাবার খেয়েছি এখন আসতে পারবো নাহ (আমি)
তুই বাইরে খাবার খেতে গেলি কেন (মেঝ ভাইয়া)
এমনি ভাইয়া কিছু কথা ছিলো (আমি)
বল কি বলবি (মেঝ ভাইয়া)
আমার কিছু বন্ধুকে বাসায় খাওয়াতে চাই আজকে তোমার বিয়ে উপলক্ষ্যে কোন সমস্যা হবে বলো আমার বন্ধু ২৫ জন আছে সমস্যা হলে বলো আমি ওদের বাইরে থেকে খায়িয়ে দেই (আমি)
থাপ্পড় মেরে দাঁত ফালাই দিবো আমি এখনই ব্যবস্থা করাতে আছি তুই তোর বন্ধুদের দুপরের জন্য দাওয়াত দে আমি সব দেখবো (মেঝ ভাইয়া)
আচ্ছা বলেই ফোন কেটে দিলাম (আমি)
তারপর আমি বন্ধুদের কাছে গেলাম।
ভাই আজকেই তোদের জন্য ব্যবস্থা করেছি ট্রিট তোদের জন্য আলাদা হবে তবে এখন কাছের বন্ধুদের জন্য ফোন দিয়ে আসতে বল দুপুরে ২৫ জন আমার বাসায় খাবি (আমি)
ওকে ওয়েট কল দিতাছি  (আনান)
হুম তোরা এখন সবকিছু গুছিয়ে নিবি এবং দুপুরে চলে আসবি আমি বাসায় গিয়ে দেখি সব কিছু (আমি)
আচ্ছা ঠিকাছে (সিয়াম)
তারপর আমি একটা রিকশা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় পৌছে দেখি সবাই খাবার খাচ্ছে। আমি এটা দেখে রুমের দিকে হাটা ধরলাম
লিমন কোথায় যাচ্ছো তুমি এদিকে আসো (বাবা)
জ্বি আব্বু এইতো রুমে যাচ্ছি (আমি)
শিফা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওর দিকে তাকাতেই চোখ সরিয়ে নিলো। 
খাবার খেতে বসো শরীরের একি হাল করেছো ওখানে গিয়ে কি শুধু খেলাধুলাই করেছো (বাবা)
এইতো আব্বু শরীর তো ঠিকই আছে (আমি)
তাতো দেখতেই পাচ্ছি পড়ালেখা তো চান্দে উঠিয়ে ফেলছো যাই হোক শোনো হাবিবের বিয়েটা হয়ে গেছে আমি ভেবেছিলাম তুমি চলে আসবে কিন্তু তুমি আসতে পারোনি এদিকে আমি কথা দিয়ে ফেলেছি সবাই জানে আমি এক কথার মানুষ তাই তোমার ভাইয়ের বিয়েটা হয়েছে (বাবা)
হুম আমি বুঝতে পেরেছি (আমি)
আচ্ছা খেতে বসো (বাবা)
আব্বু আমি বাইরে গিয়ে খেয়েছি এখন আর খাবো নাহ (আমি)
বাইরে খেলে কেন তুমি (বাবা)
খুব ক্ষুধা পেয়েছিলো তাই বাইরে গিয়ে খেয়েছি বাসায় চেয়েছিলাম কেউ দেয় নি (আমি)
হয়তো খাবার রেডি হয়নি তখন (বাবা)
হুম আচ্ছা আমি গেলাম রুমে বলেই চলে আসা ধরলাম (আমি)
ঐ দাড়াও এদিকে আসো (বাবা)
জ্বি বলেন (আমি)
এখানে তোমার ভাইয়ার শ্বশুর বাড়ির মানুষরা আছে পরিচিত হয়ে নাও (বাবা)
তারপর আমি তাদের সাথে পরিচিত হয়ে নিলাম এবং আব্বুকে বলে রুমে এসে বসলাম। বসে ফোন টিপতে লাগলাম।
 কিছুক্ষণ পরই শিফা রুমে আসলো.................
☑️
পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন...........

Post a Comment

Previous Post Next Post