মামাতো বোনের অবহেলা MAMATO BONER OBOHELA সিজন ২ পর্বঃ ০৫

মামাতো বোনের অবহেলা 

সিজন ২ 

আতিক আহসান লিমন 

পর্বঃ ০৫



বিকালবেলা আমি মাইশাকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। মাইশাকে কোলে নিয়ে হাটতেছি তখন মাওয়া সামনে আসলো
ঐ কিউটি কোথায় যাচ্ছো তোমরা (মাওয়া)
তোমাকে বলছি না আমাকে কিউটি বলবে না (মাইশা)
ওহ সরি ভুল হয়ে গেছে কোথায় যাচ্ছো তোমরা (মাওয়া)
এইতো ঘুরতে বের হয়েছি এখন ঘুরবো আমরা (মাইশা)
আমাকে নিবে সাথে (মাওয়া)
না নাহ নেওয়া যাবেনা আমরা এখনই বাসায় যাবো (আমি)
নাহ নাহ ভাইয়া সবে বের হলাম আরো অনেক ঘুরবো আপু তুমি গেলে আমাদের সাথে যেতে পারো (মাইশা)
কিন্তু আমাকে মনে হয় তোমার ভাইয়া নিতে চায় নাহ (মাওয়া)
হুম তোমার না যাওয়াই ভালো হবে (আমি)
নাহ নাহ ভাইয়া আপু আমাদের সাথে যাক আমরা একসাথে ঘুরবো মজা হবে (মাইশা)
মাইশা এমনভাবে বলছে যার জন্য মাওয়াকে নিয়ে ঘুরতে যেতে। তারপর আমরা ৩ জন এক জায়গায় গিয়ে বসলাম
মাইশা তুমি আইসক্রিম খাবে (মাওয়া)
হুম খাবো আইসক্রিম আমার খুব ভালো লাগে (মাইশা)
আমি বুঝতে পেরেছি এবার আমার টাকা খরচ করানোর ধান্দা
মাইশা আপুনি তোমাকে আমি পরে আইসক্রিম কিনে দিবো মানিব্যাগ বাসায় রেখে এসেছি মিথ্যে বললাম (আমি)
মাইশা এই নাও তোমার ভাইয়ার মানিব্যাগ তাকে আমাদের জন্য আইসক্রিম আনতে বলো (মাওয়া)
মাওয়ার হাতে আমার মানিব্যাগ দেখে আমি অবাক। আর পকেট চেক করে দেখি মানিব্যাগ নেই
তুমি ওটা পেলে কোথায় (আমি)
একজনের পকেট থেকে নিয়েছি (মাওয়া)
কিন্তু কখন নিলে (আমি)
এই একটু আগে তোমার পকেট থেকে পরে গিয়েছিলো (মাওয়া)
তুমি আগে দাওনি কেন এটা (আমি)
আমার ইচ্ছের জন্য (মাওয়া)
তোমাকে আমিই.... রাগে কটমট করতে করতে (আমি)
কি করবা কিস করবা তোমারই তো আমি করতে পারো (মাওয়া)
ধুর মাইশা তোমরা বসো আমি আইসক্রিম নিয়ে আসতেছি (আমি)
তারপর আমি আইসক্রিম আনতে গেলাম। আর মাওয়ার কথা ভাবতে লাগলাম " এই মেয়ে আমার পিছুই ছাড়তেছে নাহ। কেনো এমন করতেছে আমি তো আমার জীবনের সাথে কাউকে জড়াতে চাই নাহ" এসব ভেবে দোকানে চলে গেলাম। অন্যদিকে মাওয়া আর মাইশার কথোপকথন 
মাইশা আমাকে তোমার ভাইয়ার সাথে বিয়ে দিবে (মাওয়া)
নাহ আমার ভাইয়া কাউকে বিয়ে করবে না (মাইশা)
আরে বোকা আমাকে তোমার ভাইয়ার সাথে বিয়ে দিলে আমি একসাথে ঘুরতে বের হতে পারবো (মাওয়া)
হ্যা তা ঠিক (মাইশা)
তাহলে আমাকে ভাবি বলে ডাকবে তুমি (মাওয়া)
কিন্তু ভাইয়া রাগ করলে (মাইশা)
তোমার ভাইয়া কিছু বলবে নাহ আমি আছি তো (মাওয়া)
হুম তা ঠিক আচ্ছা আমি তোমাকে ভাবি বলে ডাকবো (মাইশা)
তোমার ভাইয়াকে শুধু বলবে আমাকে বিয়ে করার কথা (মাওয়া)
আচ্ছা (মাইশা)
এভাবে ওরা কথা বলতে লাগলো আর এদিকে আমি আইসক্রিম কিনে ওদের কাছে চলে গেলাম। ২ টা নিয়েছিলাম একটা মাইশাকে আর একটা মাওয়াকে দিলাম।
একি দুটো আনলে কেন তুমি খাবে না (মাওয়া)
নাহ ভাবি ভাইয়া আইসক্রিম খায় নাহ (মাইশা)
মাইশার কথা শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।
মাইশা তুমি ওকে ভাবি ডাকতেছো কেন (আমি)
আমার তাকে তোমার জন্য পছন্দ কি কিউট একটা ভাবি হবে আমার (মাইশা)
মাইশা এসব কথা যেন তোমার মুখে আর নাহ শুনি ধমক দিয়ে (আমি)
মাইশা আমার ধমক শুনে কেদে দিলো। ওর কান্না কলিজায় গিয়ে আঘাত করলো। ওর তো কোনো দোষ নেই যা করার মাওয়া করেছে। নিশ্চয়ই এসব ওকে মাওয়া শিখিয়ে দিয়েছে
মাইশা আপুনি আমার ভুল হয়ে গেছে আসো আমার কোলে আসো (আমি)
নাহ নাহ তুমি পচা তুমি আমাকে ধমক দিয়েছে তোমার সাথে কথা নেই আমার ভাবিই ভালো আমি তার সাথে থাকবো (মাইশা)
তুমি কি কোলে আসবা নাকি আমি চলে যাবো (আমি)
আচ্ছা যাও তুমি (মাইশা)
আমি যাবো কি করে ওকে রেখে। আমি বসেই রইলাম। 
কি হলো বসে আছো কেন যাও তুমি (মাইশা)
মাইশা তোমার ভাইয়া আমাদের রেখে যাবে নাহ (মাওয়া)
হি হি আমি জানি ভাইয়া আমাকে রেখে একা যাবেনা বলেই দৌড়ে আমার কোলে বসলো (মাইশা)
আমার লক্ষি আপুনি তাড়াতাড়ি আইসক্রিম খাও আমরা বাসায় যাবো (আমি)
আচ্ছা (মাইশা)
তারপর ওদের খাওয়া শেষ হলে মাওয়াকে বাসায় পৌছে দিয়ে আমি আর মাইশা বাসায় গেলাম। 
পরের দিন সকালবেলা.........
আমি কলেজের জন্য বের হলাম। তখনই আমার রিকশা থামালো কিছু লোকজন
কি হলো আপনারা এভাবে রাস্তা আটকাচ্ছেন কেন (আমি)
হঠাৎ ঐ লোকটা আমার নাকে রুমাল ধরলো তারপর আর কিছু মনে নেই। যখন আমার জ্ঞান ফিরলো তখন দেখি একজন বুড়ো লোক বসা আমার সামনে। আমি উঠে বসলাম। পাশে তাকিয়ে দেখি মাওয়া বসা এবং সাথে ওর কিছু বান্ধবী। তারপাশেই আবার দেখি প্রিন্সিপাল স্যার মানে মাওয়ার আব্বু। 
আমি এখানে কেন (আমি)
তোমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে (মাওয়া)
হুম তা তাতো রিকশা থেকে আনছিলো বাট এখন কোথায় (আমি)
বাবা এখন তুমি কাজি অফিসে আছো (স্যার)
কিন্তু আংকেল কেনো (আমি)
তোমার আর মাওয়ার বিয়ে হবে এখন (স্যার)
মানে কি বলছেন এসব আংকেল (আমি)
হুম যা বলছি তাই করো (স্যার)
কিন্তু আংকেল (আমি)
আমি তোমার কোনো কথা শুনতে চাইনা মাওয়া আমাকে সবই বলেছে তোমার সম্পর্কে (স্যার)
কিন্তু আমি এ বিয়ে করতে পারবো নাহ (আমি)
তুমি যদি আজকে এখানে বিয়ে না করো তাহলে আজকে আমার লাশ যাবে এখান থেকে ( মাওয়া)
শোনো তোমার যা ইচ্ছে করো আমি গেলাম বলেই উঠলাম (আমি)
ওকে তাহলে দেখো বলেই ১ ছুড়ি হাতে নিয়ে হাত কাটতে লাগলো অনবরত (মাওয়া)
আমি দৌড়ে গিয়ে ওকে থামালাম। পকেট থেকে রুমাল বের করে ওর হাত বাধলাম। 
এসব করে কেনো নিজেকে কষ্ট দিচ্ছো (আমি)
আমি শুধু তোমাকে চাই তোমাকে না পেলে আমি শেষ হয়ে যাবো (মাওয়া)
বাবা আমি তোমার হাত ধরে বলছি প্লিজ তুমি এ বিয়েটা করো (স্যার)
আংকেল আমি বিয়েটা করলে আপনার মেয়ের জীবন নষ্ট হবে (আমি)
তা ও বুঝে নিবে বাবা তুমি বিয়েটা করো (স্যার)
আচ্ছা আমি বিয়ে করবো ঠিকাছে কিন্তু আপনার মেয়ে কখনো আমার থেকে স্ত্রীর মর্যাদা পাবে না এখন যদি আমার থেকে বিয়ে দিন দিতে পারেন (আমি)
আমার লাগবে না মর্যাদা তুমি শুধু বিয়ে করো পরেরটা বুঝে নিবো (মাওয়া)
তারপর আমি বিয়েটা করলাম। ইসলামি শরীয়তে ৪ স্ত্রী রাখার নিয়ম আছে। আংকেল অনেক অনুরোধ করেছে যার জন্য বিয়েটা করলাম। বিয়েটা করেই আমি কাজি অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় চলে আসলাম। আংকেল ডাক দিয়েছিলো কিন্তু না শুনেই বাসায় চলে আসলাম। 
কাজী অফিসে....
মা বিয়েটা করলি এখন ও তোকে বাসায় নেয়নি কি করবি (স্যার)
বাবা কালকে আমি নিজেই বাসায় যাবো ওর বউ সেজে আজকে আমার কাজ আছে কিছু (মাওয়া)
মা যা করার ভেবে চিন্তে করবি চল হাসপাতালে চল আগে হাত ব্যান্ডেজ করে আনি (স্যার)
তারপর মাওয়াকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে ব্যান্ডিজ করিয়ে আনলো আংকেল। এদিকে আমি বাসায় বসে ভাবতে লাগলাম " কেন আমার সাথে এমন হচ্ছে, আমি কি একটু শান্তি পাবো না" এসব ভেবে ভেবে কোনমতে দিন পার করলাম।
তারপরের দিন সকালবেলা........... 
খাবার খেয়ে কলেজের জন্য বের হলাম। কলেজে পৌছে আমি অবাক। কারণ মাওয়ার ও ওর বান্ধবীদের সাথে আজ শিফা আড্ডা দিচ্ছে। শিফা এখানে আসলো কি করে। খুব গন্ডগোল লাগছে এখানে। আমি এসব ভাবতে লাগলাম তখনই কেউ আমার সামনে হাত দিয়ে তুড়ি বাজালো। তাকিয়ে দেখি মাওয়া। শিফা এসেই আমার পায়ের কাছে বসলো
তুমি আমাকে কেনো এতো কষ্ট দিচ্ছো কেনো তুমি আমার ভালোবাসা না বুঝে চলে এলে। আমার ভুল গুলোকে কি কোনোভাবেই ক্ষমা করা যায় না (শিফা)
তুই এখানে কি করিস আর আমার ঠিকানা তুই কি করে পেলি (আমি)
তুমি আমার স্বামী আমি তো তোমার কাছেই আসবোই (শিফা)
না আমাকে কি একটু শান্তি দিবি নাহ তোরা (আমি)
যার ২ টা বউ তার অশান্তি কিসের (শিফা)
তুই বিয়ের কথাও যেনে গেছিস (আমি)
হুম জানবেনা কেন ওর অনুমতিতেই আমি বিয়ে করেছি তোমাকে (মাওয়া)
মানে ওর অনুমতি মানে আমাকে সব কিছু বুঝিয়ে বল তোরা (আমি)

তাহলে শুনো..............

মামাতো বোনের অবহেলা ( MAMATO BONER OBOHELA) সিজন ২ পর্বঃ ০৫

Post a Comment

Previous Post Next Post