মামাতো বোনের অবহেলা
সিজন ২
আতিক আহসান লিমন
পর্বঃ ০৪
আচ্ছা চল ক্লাসে যাই ১ম ক্লাস আমার জানের এখনই শুরু হবে (মাওয়া)
হুম চল বলেই দুজনে একসাথে ক্লাসের দিকে হাটা শুরু করলো।
এই ছিলো ফ্লাশব্যাক।
আমি সময়মতো ক্লাসে গেলাম। ক্লাসে গিয়ে সবার এটেনশন নিয়ে পড়ানো শুরু করলাম। কিন্তু মাওয়া মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে থাকে শুধু। এখন আর অন্য কোনো মেয়ে আমার দিকে তাকাতে পারে না মাওয়া মানা করে দিছে। মাওয়া যেভাবে তাকিয়ে আছে এটা খুব অসহ্য লাগে।তাই মাওয়াকে উদ্দেশ্য করে
এই যে আপনি দাড়ান (আমি)
মাওয়া দাড়িয়ে গেলো।
জ্বি স্যার কিছু বলবেন (মাওয়া)
আপনি যদি আমার ক্লাস করতে চান তো আপনার অভ্যাস গুলো ত্যাগ করবেন নাহলে আমি ক্লাস থেকে বের করে দিবো (আমি)
এহ আসছে বের করে দিবো আর বের করে দিলেও বাইরে দাড়িয়ে তোমাকে দেখবো (মাওয়া মনে মনে)
কি ভাবছেন আপনি (আমি)
ভাবতেছি স্যার আপনাকে না দেখে আমি থাকতে পারবো না (মাওয়া)
কিহ বের হন আপনি ক্লাস থেকে তাড়াতাড়ি (আমি)
স্যার আপনার সাথে একটা কথা আছে একটু আপনার সামনে আসি (মাওয়া)
ওকে যা বলার তাড়াতাড়ি বলে ক্লাস থেকে বের হন (আমি)
মাওয়া আমার কাছে আসলো। মাওয়া আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে
আমি আপনাকে ভালোবাসি বলেই গালে একটা কিস করে দৌড়ে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে গেলো (মাওয়া)
আমি গালে হাত দিয়ে বোকাবনে চলে গেলাম। এই মেয়েটা করলো। স্টুডেন্ট দের দিকে তাকিয়ে দেখি তারা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতেছে।
স্টপ ইট সবাই থামো আমি ওর ব্যবস্থা পরে নিচ্ছি এখন তোমরা ক্লাস করো (আমি রেগে বললাম)
আমার রাগ দেখে সবাই মনোযোগী হয়ে গেলো। প্রচুর রাগ ছিলো মাথায় তা নিয়ে ক্লাস শেষ করলাম। এরপর প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে গেলাম সেখানে গিয়ে দেখি মাওয়া আংকেলের পিছনে দাড়িয়ে আছে।
বাবা ক্লাস শেষ তুমি নাকি আমার মেয়ের উপর রেগে আছো (স্যার)
না মানে আংকেল আমি রেগে থাকবো কেন (আমি)
না এমনি মাওয়া বললো ওকে নাকি ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছো (স্যার)
জ্বি আংকেল ক্লাসে দুষ্টমি করে (আমি)
তাহলে ঠিকাছে বাবা ওকে কাউকে কোনো ছাড় দিবে না সবার শাস্তি সমান (স্যার)
জ্বি আংকেল (আমি)
আর শোনো আজকে ভার্সিটি শেষে মাওয়াকে একটু বাসায় পৌছে দিবে আমার একজায়গায় যেতে হবে কাজ আছে (স্যার)
আচ্ছা আংকেল পৌছে দিবো (আমি)
মাওয়া মামুনি ক্লাসে যাও তুমি (স্যার)
আচ্ছা আব্বু (মাওয়া)
আমার দিকে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে ক্লাসে চলে গেলো। আমার রাগ কমলো না মেয়েটা সবার সামনে আমাকে কিস করলো আবার বলে ভালোবাসি। আমি আমার লাইফে কাউকে চাই না আমি চাই নির্জন একাকীত্ব জীবন কাটাতে। আর কষ্ট চাইনা জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছি। এখন আমার ক্লাস নেই তাই ভার্সিটির বাইরে গিয়ে দোকান থেকে একটা সিগারেট কিনে খেতে থাকলাম। খাওয়া শেষে বিল দিয়ে বের হতে যাবো তখনই দেখি মাওয়া আসলো। আমার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিয়ে দোকানদারকে বললো
আংকেল একটা বেনসন সিগারেট দেনতো (মাওয়া)
আমি ওর কথা শুনে ভাবছি আংকেল নিতে পাঠিয়েছে।
এই যে মা সিগারেট নাও (দোকানদার)
মাওয়া সিগারেট টা আমাকে অবাক করে লাইটার দিয়ে ধরিয়ে টান দিতেই কেশে উঠলো। যা দেখে আমি হেসে উঠলাম
ঐ একদম হাসবা না আমি আজকে দেখবো এটা খেয়ে তুমি কি স্বাদ পাও (মাওয়া)
আমি মাওয়াকে ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিলাম
কি পেয়েছেন কি আপনি আমি আপনার টিচার এটা মাথায় রাখবেন। সবসময় সম্মান দিয়ে কথা বলবেন ভালোবাসা কি জানো তুমি (আমি রেগে বললাম)
মাওয়া গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আমার কথা শুনলো। তারপর আমার হাত ধরে কলেজের ভিতর একটা গাছের নিচে গিয়ে দাড় করালো
শোনো তুমি আমাকে একটা কেনো ১০ টা থাপ্পড় দিলেও আমি তোমাকে ভালোবাসি। ভালোবাসা ইচ্ছে করে হয় না তোমাকে নিয়ে আমি প্রতিদিন নতুন নতুন স্বপ্ন সাজাই। তোমাকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন আকি মোট কথা বলতে আমি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি (মাওয়া)
আমি ওর কথা শুনে হাসতে লাগলাম।
শোনো ভালোবাসা বলতে কিছু নেই পৃথিবীতে একজন মানুষ তোমাকে যতই ভালোবাসে তোমাকে কষ্ট ততোই দিবে (আমি)
কিন্তু আমি.... (মাওয়া)
মাওয়াকে থামিয়ে দিলাম।
তুমি আমাকে ভালোবাসো নাহ আমার জীবন কাহিনি শুনে ঠিক থাকতে পারবে তো (আমি)
যতই কঠিন হোক তোমার জীবন। তোমার জীবনে এতো কিসের কষ্ট আমি জানতে চাই (মাওয়া)
শোনো তাহলে...............
এরপর আমার সাথে সিজন ১ এ ঘটা কাহিনি গুলো বললাম (আমি)
আমি তাকিয়ে দেখি মাওয়া চোখে পানি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
তুমি এতোটা কষ্ট পেয়েছো জীবনে তা বোঝা অসম্ভব (মাওয়া)
হুম শোনো ভালোকরে পড়ালেখা করো আমি বিবাহিত আমার পিছনে পড়ে থেকো না তোমার জীবনে আমার থেকে ভালো কেউ আসবে (আমি)
আমাকে একটু একা থাকতে দাও আমি ক্লাসে গেলাম বলেই চলে গেলো (মাওয়া)
আমিও উঠে লাইব্রেরিতে গিয়ে একটা গল্পের বই নিয়ে পড়তে থাকলাম। আর ভাবতে লাগলাম মেয়েটার থেকে দূরে থাকতে হবে ও সত্যিই আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে। যাই হোক এভাবে ক্লাস কমপ্লিট করলাম। আমি মাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম কারণ আংকেল ওকে বাসায় দিয়ে আসতে বলেছিলো।কিছুক্ষণ পর মাওয়া আসলো ওর চোখ লাল নিশ্চয়ই কান্না করেছে অনেক। আমার সামনে এসে একটা হাসি দিলো
তুমি অপেক্ষা করেছো আমার জণ্য আমি তো ভেবে নিয়েছিলাম তুমি চলে যাবে (মাওয়া)
দেখো আমি সবসময় নিজের দায়িত্ব পালন করি আংকেল যেহেতু বলেছে সেহেতু আমার কাজটা করতেই হবে (আমি)
সেই জন্যই তো তোমাকে আমার এতো ভালো লাগে চলো রিকশা নাও আজকে রিকশায় যাবো গাড়ি বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি (মাওয়া)
গাড়ি পাঠালে কেন গাড়িতেই তো যেতে পারতাম (আমি)
না আজকে রিকশায় যাবো তোমার সাথে (মাওয়া)
পাগলামি কেনো করতেছো এরকমের (আমি)
মেয়েটাকে কিছু বলতে পারছি নাহ কারণ আজকে অনেক কষ্ট পেয়েছে
পাগলামির আর দেখলে কি আমি তোমার পাগলি হবো (মাওয়া)
আবার শুরু করেছো তুমি আমি তোমাকে বলছি আমাকে নিয়ে আর ভাববে নাহ আমি বিবাহিত (আমি)
বিবাহিত তো কি হয়েছে একজনের ২ টা বউও থাকে (মাওয়া)
তুমি সত্যিই পাগল হয়ে গেছো চলো তাড়াতাড়ি তোমাকে বাসায় পৌছে দিতে হবে (আমি)
একটা রিকশা ডাকলাম ওরে উঠালাম এবং আমি আরেকটা ডাকতে লাগলাম
ঐ আরেকটা ডাকছো কেন এই রিকশাতেই উঠো (মাওয়া)
তুমি চুপ থাকো (আমি)
মাওয়া মন খারাপ করে ফেললো।
শিফা বললে তো তাড়াতাড়ি উঠে যেতেন (মাওয়া)
কথাটা শুনে শিফার কথা মনে পড়ে গেলো ওর সাথেও তো রিকশায় উঠতে চাইছিলাম নাহ কিন্তি জোর করে উঠিয়ে কি রোমান্টিক কাজ করেছিলো।
কি হলো এখনও উঠবেন নাহ নাকি (মাওয়া)
ওর কথায় আমার ঘোর কাটলো। আমি ভাবতে লাগলাম উঠবো কি উঠবো না
মামা উঠেন মামির উপর রাগ করবেন না (রিকশাওয়ালা)
মাওয়া এবার জোর করে রিকশায় উঠালো আমাকে।
মামা আপনি যান (মাওয়া)
এটা কিন্তু ভালো হলো না (আমি)
চুপ এতো কথা বলো কেন তুমি আমারও কিন্তু রাগ আছে (মাওয়া চোখ গরম করে)
তুমি রাগ দেখালে আমার কি (আমি)
ঐ তোর কি মানে তুই রাগ ভাঙাবি। কি মনে করেছিস তোর কথায় আমার ভালোবাসা কমে গেছে একদম বরং বেড়ে গেছে। আমার জীবনের দায়িত্ব আমি তোকে দিলাম। আমি শুধুই তোর (মাওয়া)
ওর কথা শুনে আমার চোখ বড় হয়ে গেলো এ মেয়ে বলে কি। আমি যে এই মেয়ের টিচার তার কোনো খেয়ালই নেই আপনি থেকে তুমি এখন আবার তুইতে চলে গেছে
এখন কিন্তু বাড়াবাড়ি করতেছো (আমি চোখ গরম করে)
মাওয়া আমার চোখের দিকে তাকালো
আমার সাথে চোখ গরম করে লাভ নেই (মাওয়া)
আল্লাহ আমি এ কার পাল্লায় পড়লাম (আমি)
এদিকে দেখি তো তোমার চোখে মনে হয় প্রবলেম আছে (মাওয়া)
আমার চোখ দেখার নাম করে আমার চোখে কিস করে দিলো।
শোনো এই চোখ শুধু আমাকে লজ্জায় ফেলবে ভয় পাওয়াবে না (মাওয়া)
ওর কান্ডকারখানা দেখে আমি অবাক। মেয়েটা আমাকে পাগল বানিয়ে ফেলবে। কিছুক্ষণ পরই মাওয়ার বাসার সামনে চলে আসলাম মাওয়া নেমে গেলো।
মামা ভাড়া বেশি নিবেন। আর আমার ভাড়াও সে দিবে (মাওয়া)
আচ্ছা মামি (রিকশা ওয়ালা)
শোনো এখন থেকেই বউয়ের দায়িত্ব নাও আমি শীঘ্রই তোমাকে বিয়ে করবো (মাওয়া আমাকে মিন করে)
তারপর আমি রিকশা নিয়ে বাসায় আসলাম।
মামা ভাড়া বেশি দিতে হবে না আপনি ন্যায্য মূল্য দেন (রিকশাওয়ালা)
আমি তাকে ভাড়া বেশিই দিলাম সততা দেখে। যাই হোক বিকালবেলা আমি মাইশা নিয়ে ঘুরতে বের হলাম হঠাৎ মাওয়া সামনে আসলো...........