মামাতো বোনের অবহেলা
#সিজন ২
আতিক আহসান লিমন
পর্বঃ ০১
(যারা গল্পের সিজন ১ পড়েন নাই তারা আগে সিজন ১ পড়ে নিবেন নাহলে গল্পের কিছুই বুঝবেন নাহ। শেষে লিংক পাবেন সিজন ১ এর)
✍️✍️✍️✍️✍️
ঐ দেখ দেখ লিমন স্যার এসেছে (রুহি)
কোথায় কোথায় আমার জানেমান বলেই পিছনে ফিরে আমায় দেখলো (মাওয়া)
দেখ স্যারকে আজকে কতো হ্যান্ডসাম লাগছে তাই নাহ (রুহি)
একদম নজর দিবিনা আমার জানের দিকে চোখ তুলে ফেলবো (মাওয়া)
এতো জান জান করছিস তার সামনে তো ঠিকমতো কথাও বলতে পারো না (রুহি)
কিভাবে কথা বলবো সবসময় রাগি মুডে থাকে আর মুখটাও গম্ভীর থাকে সবসময় (মাওয়া)
তাও ঠিক বলছিস (রুহি)
আচ্ছা চল ক্লাসে যাই ১ম ক্লাস আমার জানের এখনই শুরু হবে (মাওয়া)
হুম চল বলেই দুজনে একসাথে ক্লাসের দিকে হাটা শুরু করলো।
আপনার কিছুই বুঝতেছেন না তাইতো তাহলে শুনুন যখন আমার উপর আমার পরিবারের সবাই অবহেলা করে তখন আমি অনেকটাই ভেঙে পড়ি।
একদিন আমি আমার কষ্টের কথা ভাবতে ভাবতে হেটে হেটে বাসায় যেতে লাগলাম। কিন্তু হাটতে হাটতে কখন যে মাঝখান দিয়ে হাটতে শুরু করলাম খেয়ালই নেই। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে আমার সামনে ব্রেক করলো। গাড়ি থেকে একজন লোক বেরিয়ে আসলো তাকিয়ে দেখি মামা
কিরে বাবা তুই রাস্তার মাঝখান দিয়ে এভাবে হাটছিস কেন আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে তোকে মেরে দিয়ে চলে যেতো (মামা)
আসলে মামা খেয়াল ছিলো নাহ (আমি)
হুম বাবা কি হয়েছে বলতো তুই আবার এতো শুকিয়ে যাচ্ছিস কেন (মামা)
আমিঃ নিশ্চুপ
আচ্ছা আমায় তোর কিছু বলতে হবেনা যা বলার তোর মামিকে বলিস এখন গাড়িতে উঠ (মামা)
মামা আমি বাসায় যাবো [আমি]
বাসায় যেতে হবেনা তুই আমার সাথে চল আমি কোনো কথা শুনতে চাই না (ধমকের সুরে মামা)
আর কোন কথা বলতে পারলাম নাহ মামা হাত ধরে নিয়ে গাড়িতে বসালো। আমিও চুপচাপ গাড়িতে বসলাম। তারপর মামা নিয়ে গেলো তাদের বাসায়। মামি আমাকে দেখে অনেক খুশি হলো
কেমন আছিস বাবা তুই এতো শুকিয়ে গেছিস কেন (মামি)
তোমার ছেলে আজকে আমার গাড়ির নিচে পড়া ধরছিলো জিজ্ঞেস করে দেখোতো কি হয়েছে ওর (মামা)
কি বলছো তুমি ওর কোথাও লাগেনি তো বাবা তুই রাস্তায় খেয়াল করে হাটিস নাহ কেন (মামি)
আসলে মামি (আমি)
তুই সত্যি করে বলতো তোর কি হয়েছে তুইতো কখনো মুখ গোমড়া করে রাখিস নাহ খেয়াল হারিয়ে ফেলস নাহ (মামি)
নাহ কিছু হয়নি মামি {আসলে সত্যিটা জানাতে চাইনি মামিকে} (আমি)
মামি এবার আমার হাত মামির মাথায় রাখলো।
বাবা তুই আমার মাথায় হাত রেখে বলতো কি হয়েছে (মামি)
আমি এবার আর থেমে থাকতে পারলাম নাহ আমার সাথে ঘটে যাওয়া সব খুলে বললাম মামিকে এবং অন্যদিকে ফিরে কেঁদে দিলাম (আমি)
পিছন থেকে আমার কাধে হাত রাখলো মামি।
তোর উপর দিয়ে এতোটা ঝড় গেলো আর আমি আজকে জানলাম (মামি)
আরে তুমি বাদ দাও আগে ওকে খাবার খাইয়ে দাও কতোদিন ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করে নাহ তারপর ওর জন্য কোন ব্যবস্থা করবো (মামা)
হুম তাইতো আমার সেদিকে খেয়ালই নেই আয় বাবা আমার সাথে আয় বলেই খাবার টেবিলে নিয়ে বসালো (মামি)
তারপর মামি নিজ হাতে খাইয়ে দিলো খাবার এবং খাওয়া শেষে আমায় নিয়ে গিয়ে শোফায় বসলো।
শোনো এবার শিফাকে উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে (মামি)
শুধু শিফাকে না লিমনের পুরো পরিবারকেই শাস্তি দিতে হবে তারা পেয়েছেটা কি সবসময় আমার ছেলেটাকে কষ্ট দিবে ওকে একটুও শান্তিতে থাকতে দিবে না (মামা)
আচ্ছা তাহলে এখন কি করবে (মামি)
ওকে দূরে কোথাও পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে (মামা)
কি বলো তুৃমি ওকে দূরে পাঠালে আমার ছেলেটাকে না দেখে থাকবো কি করে (মামি)
ওর ভালো থাকতে হলে তোমায় এটুকু sacrifice করতেই হবে। লিমন বাবা তোর কোনো সমস্যা নেই তো (মামা)
মামা তোমরা আমার ব্যাপারে যদি কোনো সিদ্ধান্ত নাও না করেছি কখনো (মামি)
আচ্ছা তাহলে আর সমস্যা নেই এখন আমি ভেবে দেখতেছি তোকে দূরে কোথায় পাঠাবো (মামা)
হুম বাবা আমাকে কল করবি। নিজের শরীরের খেয়াল রাখবি, কখনো মন খারাপ করে রাখবি নাহ একজন স্বাধীন মানুষের মতো চলবি (মামি)
আচ্ছা মামি আমি এখন বাসায় যাই (আমি)
তারপর আমি বাসায় চলে গেলাম। বাসায় গিয়ে দেখি সবাই খাবার খাচ্ছে টেবিলে আমি সেদিকে একবার তাকিয়ে চলে গেলাম রুমে। রুমে গিয়ে দরজা আটকিয়ে শুয়ে পড়লাম। ভাবতে লাগলাম "" আমাকে মামার কথা শুনতে হবে। যে পরিবার আমার কথা একটুও ভাবে না। তাদের সাথে আর থাকবোনা চলে যাবো বহুদূরে"" এসব ভাবতে লাগলাম। তখনই ফোনটা বেজে উঠলো তাকিয়ে দেখি মামার ফোন আমি সাথে সাথে রিসিভ করলাম
কিরে ঘুমিয়ে পড়েছিস (মামা)
নাহ মামা এতো ঘুমাইনি (আমি)
নাহ আমি ভাবছি সারাদিন রুমে থাকো তাড়াতাড়ি ঘুমাতেই পারো (মামা)
ওহ আমি ঘুমাইনি (আমি)
আচ্ছা শোন তোকে আমি আমার এক ফ্রেন্ডের বাসায় পাঠাবো অনেক দূরে তুই ওখানে গিয়ে থাকবি (মামা)
মামা কতোদিন থাকবো ওখানে আর আমি কারো বাসায় এমনি এমনি থাকতে পারবো নাহ আমার জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা করো ঐ শহরে তাহলে আমি তাকে ভাড়া দিয়ে থাকবো (আমি)
আরে বোকা ওখানে আমার ফ্লাট আছে তোকে টাকা দিতে হবে না আর আমার বন্ধু ওখানকার ভার্সিটির প্রিন্সিপাল ওকে বলে তোকে ওখানের টিচার বানিয়ে দেই কি বলিস (মামা)
আচ্ছা তাহলে সমস্যা নেই তুমি সবকিছুর ব্যবস্থা করো আমি পরশু ওখানে চলে যাবো (আমি)
ওকে বাবা তুই একটু এখন নিশ্চিন্তে ঘুম দে আর নিজের খেয়াল রাখিস বলেই ফোন কেটে দিলো (মামা)
তারপর বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত আপনারা সবই জানেন। এখন সবাই জানুন বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার
পরের কাহিনি............
আমি চলে গেলাম বাসা থেকে অনেক দূরে যেখানে যেতে প্রায় ১ দিন লাগলো। মামার দেওয়া ঠিকানা মতো চলে গেলাম। তাকিয়ে দেখি গেইটে একজন লোক দাড়ানো।
আপনার নাম কি লিমন (লোকটি)
হ্যা আপনি আমাকে চিনলেন কি করে (আমি)
বাবা আমি এই বাড়িটি দেখাশুনা করি আর আজ থেকে আপনার দায়িত্ব আমার (লোকটি)
ওহ তা চাচা আমাকে আপনি করে বলতে হবে না আমাকে তুমি করে বললেই হবে আপনার নাম কি (চাচা)
বাবা তুমি অনেক ভালো। আমার নাম রহমান তুমি রহমান চাচা বলে ডেকো (র. চাচা)
আচ্ছা চাচা চলেন ভিতরে যাই অনেক ক্লান্ত বিশ্রাম নিতে চাই (আমি)
ওহ বাবা আমার সেদিকে খেয়ালই নেই চলো ভিতরে চলো (চাচা)
তারপর আমি আর রহমান বাড়ির মধ্যে গেলাম। বাড়িটা ভালোই খুব পরিপাটি আছে। আমাকে রহমান চাচা একটা রুম দেখিয়ে দিলো। আমি রুমে চলে গেলাম৷ তখনই মামা কল দিলো
কিরে পৌঁছে গেছিস (মামা)
হ্যা মামা মাত্র আসলাম (আমি)
ওহ এখন কিছু খেয়ে একটু বিশ্রাম নে (মামা)
আচ্ছা মামা। তুমি মামির কাছে ফোনটা দাও (আমি)
ওকে দাড়া দিচ্ছি (মামা)
তারপর মামিকে ডাক দিয়ে মামির কাছে ফোন দিলো
হ্যা বাবা পৌছাতে কোনো সমস্যা হয়নিতো (মামি)
নাহ মামি কোনো সমস্যা হয়নি আর এখানেও সমস্যা হবে না রহমান চাচা খুব ভালো মানুষ (আমি)
ওহ তাহলে তো আর বেশি চিন্তা করতে হবে না। বাবা শরীরের যত্ন সবসময় নিবি (মামি)
আচ্ছা মামি তোমার চিন্তা করতে হবে নাহ আমি সব কিছু মানিয়ে নিতে পারবো (আমি)
হুম বাবা বাসার কথা চিন্তা করে কষ্ট পাবিনা। তোকে তোর মতো বাঁচতে হবে (মামি)
আচ্ছা মামি এখন রাখি একটু বিশ্রাম নিবো তারপর বিকালবেলা এই শহরটা ঘুরতে বের হবো (আমি)
আচ্ছা বাবা তুই বিশ্রাম নে বলেই ফোন কেটে দিলো (মামি)
তারপর আমি ফ্রেশ হতে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি রহমান চাচা হালকা খাবার নিয়ে বসে আছে।
বাবা এখন হালকা খাবার খেয়ে বিশ্রাম নাও একটু পরই দুপুরের খাবার খাবে (চাচা)
আচ্ছা চাচা সমস্যা নেই রান্না করেন কে (আমি)
কেনো বাবা তোমার চাচি তারসাথে একেবারে দুপরে খাবার সময় পরিচিত হবে (চাচা)
আচ্ছা (আমি)
আচ্ছা বাবা আমি আসি তুমি খাবার খেয়ে বিশ্রাম নাও (চাচা)
তারপর চাচা চলে গেলেন। আমি খাবারটা খেয়ে নিলাম। তারপর একটা সিগারেট হাতে নিয়ে ভাবতে লাগলাম"" কতোই না আনন্দে ছিলাম আমি। শিফাকে কতোই না ভালো বাসলাম কিন্তু ও আমাকে কতো কষ্ট দিলো। আবার ঐ মেয়েটাই ছলনা করে আমাকে পরিবারের কাছে ছোট করলো ""। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে ক্লান্ত থাকার জন্য। আযান শুনে ঘুম ভেঙে গেলো। উঠে গোসল করলাম। তারপর চাচার সাথে নামায পড়তে গেলাম। এসে দুজনে খাবার খেতে বসলাম। এবং চাচির সাথেও পরিচিত হলাম। চাচিও খুব ভালো মনের মানুষ। কথা বলে বুঝতে পারলাম। খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে ফেইসবুক আইডি ডিএক্টিবেট করলাম। তারপর অন্যনামে নতুন আইডি খুললাম নতুন সিম দিয়ে। ওহ বলাই হয়নি আগের সিমটা ঙেঙ্গে আসার সময় রাস্তায় ফেলে দিয়েছি। ফোন টিপতে টিপতে বিকাল হয়ে গেলো। আমি চাচাকে বলে একলা হাটতে বের হলাম। যাই হোক একটা দোকান থেকে সিগারেট কিনে রাস্তার পাশে একটা বেঞ্চে বসে সিগারেট খেতে লাগলাম আর চারপাশটা দেখতে লাগলাম। তখনই কোথা থেকে সামনে কয়েকটা মেয়ে আসলো......